ফুটবল

ব্রাজিলের যত লজ্জার রেকর্ড Brazil গোল খাওয়ার ইতিহাস

ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল এবং শক্তিশালী দল গুলোর মধ্যে অন্যতম ব্রাজিল। ব্রাজিলই ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র দল যে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ বার বিশ্বকাপ জেতার গৌরব অর্জন করেছে। সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত মুগ্ধ হয়েছে ব্রাজিলের ছন্দময় ফুটবলে। তবে প্রতিটি দলের সফলতাও যেমন আছে  পাশাপাশি আছে কিছু ব্যর্থতাও । আজকের প্রতিবেদনে আমরা ফুটবল ইতিহাসে ব্রাজিলের যত লজ্জার রেকর্ড গুলো তুলে ধরব ব্রাজিলিয় সমর্থকদের কিছু দুঃস্মৃতি। চলুন দেখে আসি ব্রাজিলে ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পাঁচটি পরাজয়।

ফুটবল ইতিহাসে ব্রাজিলের যত লজ্জার রেকর্ড

৮জুলাই, ২০১৪। স্বাগতিক দেশ হিসেবে সেদিন ব্রাজিল মাঠে নেমেছিল জার্মানির সাথে বিখ্যাত মেনেইরা স্টেডিয়ামে। এমনিতেও ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল তার উপর স্বাগতিক দেশ হিসেবে দর্শকদের চাপ,এর সাথে আবার  মাঠে নেই(ইনজুরির কারণে)  ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার। সবকিছু মিলিয়ে ব্রাজিল যেন সেদিন পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। ব্রাজিলের সমর্থকদের স্বপ্ন ভঙ্গ করে একে একে সাতটি গোল দিয়ে সেদিন ব্রাজিলকে বিধ্বস্ত করেছিল জার্মানি।ব্রাজিলের প্লেয়ার ও সমর্থকদের কান্নায় একাকার হয়ে পুরো স্টেডিয়ামে নেমে এসেছিল শোকের শোকের ছায়া। চলুন দেখে আসা যাক জার্মানির সাথে ব্রাজিলের ৭ গোল খাওয়ার ম্যাচটি কেমন ছিল।

ব্রাজিলের যত লজ্জার রেকর্ড Brazil গোল খাওয়ার ইতিহাস

 Brazil ৭ গোল খাওয়ার ইতিহাস জার্মানির সাথে বিশ্ব রেকর্ড

ইউরোপের দেশ হিসেবে জার্মানি বরাবরই গতিশীল ফুটবলে পারদর্শী।তার সাথে  লম্বা  পাস  আর জোরালো আক্রমণ জার্মানি ফুটবলের সবথেকে বড় শক্তি। আর ব্রাজিলের সাথে সে ম্যাচে জার্মানি তার শক্তির পুরোটা প্রয়োগ করেছিল নিদারুণভাবে।জার্মানির সেদিন  ৪-৩-৩ পজিশনে প্লেয়ার সেট করে একের পর এক আক্রমণ করে বিধ্বস্ত করেন  ব্রাজিলকে। জার্মানির প্রতিটি প্লেয়ার যেন সেদিন মেতেছিলেন গোল-উৎসবে।মিরোস্লাভ ক্লোসা, থমাস মুলার, মেসুত ওজিল, ফিলিপ লাম, টম ক্রুজদের ক্ষিপ্র আক্রমণে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা যেনো সেদিন পরিণত হয়েছিল দর্শকে। শুধু দর্শক নয় এ যেন অসহায় দর্শক। খেলা শুরুর ১১ মিনিটের মাথায় থমাস মুলার টম ক্রুজের পাস থেকে প্রথম গোল করেন, আর এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় যেন জার্মানির গোল-উৎসব।

খেলার ২৩ মিনিটের মাথায় জার্মানি স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা জার্মানির হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। দ্বিতীয় গোলের উৎসব শেষ হতে না হতেই তার ঠিক এক মিনিট পরেই(২৪ মিনিটে) অধিনায়ক ফিলিপ লামের পাস থেকে টম ক্রুজ তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের জালে বল পৌঁছে দেয়। তৃতীয় গোলের ঠিক দুই মিনিট পরেই(২৬ মিনিটে) আবারো গোল করেন টম ক্রুজ। ব্রাজিলের রক্ষণকে বিধ্বস্ত করে তার তিন মিনিট পরেই(২৯মিনিটে) মেসুত ওজিলের এক দুর্দান্ত পাস থেকে জার্মানির হয়ে ৫ নম্বর গোলটি করেন খেদিরা।খেলার সময় শেষ হয়েছে মাত্র ২৯ মিনিট এরমধ্যেই ব্রাজিলের জালে ৫ গোল। পুরো স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের সমর্থকদের স্বপ্নভঙ্গের কান্নায় যেন স্তব্ধ হয়ে যায়।

এ যেন  পাড়াগাঁয়ের কোন ফুটবল ম্যাচ। ২৯ মিনিটেই গোল হজম পাঁচটি। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে (হাফটাইমের পর) ব্রাজিলের জালে আরও দুই গোল যোগ করেন জার্মানি। হাফটাইমের পরে খেলার ৬৯ মিনিটের মাথায় ফিলিপ লাম এর পাস থেকে জার্মানির হয়ে ষষ্ঠ গোলটি করেন আন্দ্রে চুরেল। তার দশ মিনিট পর (৭৯ মিনিটে) থমাস মুলার এর পাস থেকে আবারো গোল করেন আন্দ্রে চুরেল।সম্পূর্ণ হলো ব্রাজিলের ৭ গোল খাওয়ার বিশ্ব রেকর্ড। খেলার একদম শেষ মিনিটে(৯০ মিনিটে) ব্রাজিলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন অস্কার। শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথেই ব্রাজিল বিধ্বস্ত হলো তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জাজনক পরাজয় (৭-১)এর ব্যবধানে ।

আরো পড়ুনঃ মেসি রোনালদো পরিসংখ্যান ২০২৩

চলুন দেখে আসি ব্রাজিলের ৭ গোল খাওয়ার ম্যাচে কেমন ছিল দুই দলের একাদশ

জার্মানি একাদশ(২০১৪ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল)

১.ম্যানুয়েল নয়্যার(গোলরক্ষক)

২.বেনেডিক্ট হাওয়েডিস

৩.ম্যার্টস হামমেলস

৪.জেরোম বোটিং

৫.ফিলিপ লাম

৬.থমাস মুলার

৭.বস্তিয়ান শোয়েনস্টইগার

৮.সামি খেদিরা

৯.মিরোস্লাভ ক্লোসা

১০.মেসুত ওজিল

১১.টম ক্রুজ

ব্রাজিলের একাদশ(২০১৪ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল)

১.জুলিও সিজার(গোলরক্ষক)

২.ডেভিড লুইজ

৩.মাইকন

৪.দান্তে

৫.মার্সেলো

৬.লুইস গুস্তাভো

৭.অসকার

৮.হাল্ক

৯.বার্নার্ড

১০.ফার্নান্দিনহো

১১.ফ্রেড

ব্রাজিলের Brazil ইতিহাসে  পরবর্তী বড় পরাজয় গুলি

ব্রাজিলের ইতিহাসে গোল ব্যবধানে সবচেয়ে বড় পরাজয়(৭-১) জার্মানির সাথে হলেও ব্রাজিলের দ্বিতীয় বড় হার দেখতে গেলে ফিরে যেতে হবে ও ১৯২০ সালে। উরুগুয়ের সাথে সেই ম্যাচে ব্রাজিল ৬-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়। এরপর আর্জেন্টিনার সাথে ১৯৪০ সালে ৬-১ ব্যবধানে পরাজিত হয় ব্রাজিল । ব্রাজিলের ইতিহাসে যা তৃতীয় বৃহত্তম পরাজয় । আর্জেন্টিনার সাথে ৬-১ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার ঠিক এক বছর আগে ১৯৩৯ সালেও একই দলের সাথে ব্রাজিল ৫-১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়। যা ব্রাজিলের ইতিহাসে চতুর্থ বৃহত্তম পরাজয়। এরপর ১৯৬৩ সালে বেলজিয়ামের সাথে ১-৫ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয় ব্রাজিল। যা ব্রাজিলের ইতিহাসে পঞ্চম বৃহত্তম পরাজয়।

ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে কিছু প্রশ্নঃ

প্রশ্নঃ প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী কোন দেশ?

উত্তরঃ প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ ১৯৩০ সালে আয়োজিত হয়। উরুগুয়ে প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী দেশ।

প্রশ্নঃ নেইমারের মোট গোল সংখ্যা কত?

উত্তরঃ দলের হয়ে ১৩৫ ম্যাচে ১০২ টি গোল করেছেন এবং ক্লাবের হয়ে  ৮৩৮ ম্যাচ খেলে ৬৪১ গোল করেন।

(সব খবর প্রতি মুহূর্তে পেতে ফলো করুন আমাদের Google News  পেজে )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button