Bangla

বনলতা সেন কবিতার মূলভাব সারাংশ ব্যাখ্যা

আজকে আমরা কথা বলবো বনলতা সেন কবিতার মূলভাব নিয়ে তাহলে চলুন শুরু করা যাক। ‘বনলতা সেন’ কবি জীবনানন্দ দাশের (১৮৯৯-১৯৫৪) তথা বাংলা কাব্য সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রেমের কবিতা। এ কবিতার প্রেম ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, এর প্রেম শাশ্বত নরনারীর চিরন্তন প্রেম।

বনলতা সেন কবিতার মূলভাব সারাংশ ব্যাখ্যা

দেখে নিন বনলতা সেন কবিতার মূলভাব

কবি এই কবিতাটিতে মৃত্যুহীন মানবসত্তার অন্তর্লোককে উজ্জীবিত করা মহিমাময়ী প্রেমের জয়গান গেয়েছেন। অনন্তকাল ধরে টিকে থাকা পৃথিবী তার ছােট ছােট পিঞ্জরে আমাদের জীবনকে লালন করে থাকে। ব্যক্তিসত্তার সকল খেলার সীমা সেই নির্দিষ্ট পিঞ্জরে আবদ্ধ। তাই জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী খেলাটুকু শেষ করে ব্যক্তি এক সময় মৃত্যুতে লীন হয়ে যায়। কিন্তু ব্যক্তিসত্তার মৃত্যু ঘটলেও মৃত্যু ঘটে না মানবসত্তা ও সভ্যতার। হাজার হাজার বছর ধরে এই মানবসত্তা সভ্যতার নানান উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বুকে আপন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। কবি তাঁর আপন চেতনায় অবিনাশী মানবসত্তার যুগ যুগ ধরে পথ চলার গতি ও ক্লান্তি অনুভব করেছেন। সেই মৃত্যুহীন মানবসত্তার অভিজ্ঞতা বুকে নিয়ে হাজার বছর ধরে তিনি হেঁটে চলেছেন পৃথিবীর পথে পথে। সুবিস্তৃত প্রাচ্যের সিংহল সমুদ্র থেকে রাতের অন্ধকারে মালয় সাগর পর্যন্ত তিনি পাড়ি দিয়েছেন সমুদ্র পথে।

অনেক ঘুরেছেন তিনি। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে তৃতীয় শতকের পরাক্রান্ত রাজা বিম্বিসার ও আশশাকের যে জগৎ বর্তমানে বিস্মৃতপ্রায় অতীতের কোলে আশ্রয় নিয়ে ধূসর হয়ে পড়েছে, সেই জগতেও তিনি অবস্থান করেছেন। যেখান থেকে আরাে দূরবর্তী কালের অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে যে বিদর্ভ নগর, সেই নগরীর পথও তিনি পেরিয়ে এসেছেন। আর এই বিস্তৃীর্ণ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে কবি এখন এক ক্লান্তপথিক। সমুদ্রের বুকে একের পর এক তরঙ্গের অভিঘাতে যেমন সাদা ফেনার সৃষ্টি হয়, কবি তার চলার পথের দুধারে জীবনের যে বিচিত্র তরঙ্গকে উছলে উঠতে দেখেছেন, তা এখন সেই সমুদ্র তরঙ্গের মতােই সফেন হয়ে উপচে পড়েছে তার চতুর্দিকে।

এই সফেন জীবন সমুদ্রের মধ্যে কবি দু’দণ্ড শান্তি পেয়েছিলেন নাটোরের বনলতা সেনের কাছে। মন্তব্য : বনলতা সেন’ প্রেম ও সৌন্দর্যের এক অনুপম কবিতা। যুগ যুগান্তরের পথবাসী পুরুষসত্তা এখানে খুঁজে পেয়েছে শাশ্বত নারী সত্তাকে। প্রেম ও সৌন্দর্যের অনিঃশেষ দীপ্তিতে মহীয়ান হয়ে উঠেছে সেই কাঙ্ক্ষিত শাশ্বত নারী। তাকে পাওয়া যে কোনাে পুরুষের সৌভাগ্যের বিষয়। কবি সেই সৌভাগ্যের অধিকারী এক প্রেমিক পুরুষ। আশা করি বনলতা সেন কবিতার মূলভাব ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বনলতা সেন কবিতার প্রশ্ন উত্তর সংক্ষিপ্ত 

বনলতা সেন কবিতা প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ বনলতা সেন কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থের?

উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশ  ডিসেম্বর ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত তার বনলতা সেন নামক “তৃতীয় কাব্যগ্রন্থে” কবিতাটি অন্তর্ভুক্ত করেন। জন্মঃ ১৭ ফেব্রুয়ারী, ১৮৯৯, বরিশাল।

প্রশ্নঃ বনলতা সেন কবিতার লেখক কে?

উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশ

(সঠিক খবর পেতে ফলো করুন আমাদের Google News পেজ)

4.4/5 - (21 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button