দরখাস্ত লেখার নিয়ম বা বাংলা দরখাস্ত লেখার নিয়ম। সকল প্রকার দরখস্ত লিখবেন কিভাবে সকল নিয়ম জানুন এখানেই। দাপ্তরিক পত্র আবেদনপত্র/দরখাস্ত বৈষয়িক বা ব্যবহারিক পত্রকে ইংরেজিতে Official letter বলা হয়। এই পত্রগুলো অফিস বা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত বলে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এ ধরনের পত্রে লেখকের ভাবাবেগ প্রকাশের কোন সুযোগ নেই।
গভীর মনোনিবেশের মাধ্যমে পত্রলেখক তার বক্তব্য বিষয়টি উপস্থাপন করেন। যাতে করে বক্তব্যের পারম্পর্য, ভাষার পরিচ্ছন্নতা ও শুদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহারিক পত্রগুলোকে নির্ভুলভাবে রচনা করা যায়। নির্ভুল পত্র কাঠামোর অনুসরণে লেখা পত্রগুলোতে পত্রলেখকের যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব ও যত্নবানের ছাপ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। বৈষয়িক বা ব্যবহারিক পত্রগুলো নানা শ্রেণিতে বিভক্ত।
১. ছুটির আবেদনপত্র
২. চাকরির আবেদনপত্র
৩. সমস্যাদি সম্পর্কে সরকারি বা বেসরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র
৪. পত্রিকা সম্পাদকের কাছে লিখিত পত্র
আবেদনপত্রের গুরুত্ব অত্যধিক। এখানে কোন বাহুল্য কথা থাকে না। মূল বিষয়টিকে সুন্দরভাবে সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। আর অন্যান্য পত্র থেকে চাকরির আবেদনপত্র আলাদা-এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই আবেদনপত্রগুলো স্বাভাবিক আবেদনপত্রের কাঠামো থেকে স্বতন্ত্র । আবার এই পত্রগুলো নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর। যেমন-
ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩
ছুটির আবেদনপত্রের বৈশিষ্ট্য
১. কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হয়।
২. বক্তব্য সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত করতে হয়।
৩. আবেদনপত্রে অবশ্যই ছুটির কারণ উল্লেখ করতে হয়।
৪. ছুটি বিভিন্ন শ্রেণির হয়ে থাকে। যথা : নৈমিত্তিক ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, শিক্ষা ছুটি, শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি, সংগনিরোধ ছুটি, অসাধারণ ছুটি ইত্যাদি।
৫. আবেদনপত্রে কোমলতা ও বিনয়ের সুর ধ্বনিত হবে।
৬. কোন প্রকার আবেগ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যাবে না।
বিশেষ প্রয়োজনে ছুটি ও কর্মস্থল ত্যাগের আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একখানা আবেদনপত্র লিখ।
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
বরাবর
অধ্যক্ষ,
দর্শনা সরকারি কলেজ
যশোর।
বিষয় : চার দিনের নৈমিত্তিক ছুটিসহ কর্মস্থল ত্যাগ প্রসঙ্গে।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার প্রতিষ্ঠানের বাংলা বিভাগের একজন প্রভাষক। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমার ঢাকা যাওয়া বিশেষ প্রয়োজন বিধায় আগামী ১৫-১০-২০১৭ ইং তারিখ থেকে ১৮-১০-২০১৭ ইং তারিখ পর্যন্ত এ চার দিনের ছুটি আবশ্যক।
অতএব, জনাবের নিকট প্রার্থনা উপর্যুক্ত বিষয়ের আলোকে আমাকে উক্ত চার দিনের ছুটিসহ কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি দানে বাধিত করবেন।
বিনীত
আপনার বাধ্যগত
(মোঃ মাহামুদুল হাসান মকুল বকুল )
প্রভাষক, বাংলা বিভাগ
সরকারি এমএম কলেজ
যশোর, যশোর
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩
চাকরির আবেদনপত্রের বৈশিষ্ট্য :
১. চাকরির আবেদনপত্রে প্রার্থনা জানিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হয় ।
২. বিনয়ের সাথে আবেদনপত্র শুরু করতে হয়। যেমন- বিনীত নিবেদন, সবিনয় নিবেদন। পা
৩.পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় তথ্য সংযুক্ত করতে হয়।
8. আবেদনপত্রের শেষে সংযুক্তির উল্লেখ করতে হয়।
৫. কোন প্রকার আবেগ বা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যাবে না।
৬. অতিরঞ্জন বা বাহুল্য অবশ্যই বর্জন করতে হয়।
কোন কলেজে প্রভাষকের শূন্য পদে নিয়োগ লাভের জন্য একটি আবেদনপত্র লেখ।
অথবা, দৈনিক পত্রিকায় কর্মখালি বিভাগে অভিজ্ঞ সহকারী শিক্ষকের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে, তা দেখে উক্ত পদের প্রার্থী হিসেবে একটি দরখাস্ত লেখ।
অথবা, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে শিক্ষক নিযুক্তি লাভের জন্য একটি দরখাস্ত লেখ।
তারিখ : ১০ আগস্ট, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ
বরাবর
অধ্যক্ষ,
—————আদর্শ কলেজ
বিষয় : প্রভাষক (বাংলা) পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, গত ৩০ জুলাই ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ তারিখের দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলাম যে, আপনার কলেজে প্রভাষক (বাংলা) পদে একজন লোক নিয়োগ করা হবে। আমি উক্ত পদের একজন প্রার্থী হিসেবে সদয় বিবেচনার জন্য নিম্নে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা, জীবনবৃত্তান্তসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদির বিবরণ উপস্থাপন করলাম :
১. পদের নাম : প্রভাষক (বাংলা)
২. প্রার্থীর পূর্ণ নাম (বাংলা) : ‘ক’
প্রার্থীর পূর্ণ নাম (ইংরেজিতে) : ‘Ka’
৩.মাতার নাম : ম
8. পিতার নাম : র
৫. স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম : নরহরিপুর, ডাকঘর : গোপালগঞ্জ, থানা : নবাবগঞ্জ, জেলা দিনাজপুর।
৬. বর্তমান ঠিকানা : ঐ
৭. জন্মতারিখ : ০৮/০৮/১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ
৮. বয়স (১৫/১১/২০১৫ অনুযায়ী) : ২৬ বছর ০৩ মাস ০৭ দিন।
৯. জাতীয়তা : বাংলাদেশি।
১০. ধর্ম : ইসলাম (সুন্নি)।
১১. বৈবাহিক অবস্থা : অবিবাহিত।
১২. শিক্ষাগত যোগ্যতা :
ক্রমিক নং | পরিক্ষার নাম | পাসের বছর | গ্রুপ | জিপিএ / বিভাগ | বোর্ড / বিশ্ববিদ্যালয়য় |
০১ | এস.এস.সি | ২০০৬ | বিজ্ঞান | জিপিএ-৫ | যশোর |
০২ | এইচ.এস.সি | ২০০৮ | বিজ্ঞান | জিপিএ-৫ | যশোর |
০৩ | বি.এ (সম্মান) | ২০১২ | বাংলা | দ্বিতীয় শ্রেণি | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
০৪ | এম.এচ | ২০১৩ | বাংলা | দ্বিতীয় শ্রেণি | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ২০২৩
পত্রিকা সম্পাদকের কাছে লিখিত পত্রের বৈশিষ্ট্য :
১. লিখিত পত্রটি পত্রিকা সম্পাদক বরাবর পাঠাতে হয়।
২. জনগণ বা সমাজের বিভিন্ন সমস্যা বা অভাব অভিযোগ উল্লেখ থাকে ।
৩. এ ধরনের পত্রে জনগণ ও সমাজের মানুষের কল্যাণের কথা উল্লেখ থাকে ।
৪. চিঠিতে লেখকের নাম-ঠিকানা উল্লেখ থাকে। আবার বেনামিও হয়।
৫. লেখকের ব্যক্তিগত সমস্যাও স্থান পেতে পারে ।
৬. বক্তব্য সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত হবে।
৭. পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এ ধরনের মন্তব্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন না। তাই চিঠিপত্র কলামে লেখা থাকে ‘মতামতের জন্য
সম্পাদক দায়ী নন’।
যানজট নিরসন সম্পর্কে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি পত্র রচনা কর।
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ,
বরাবর
সম্পাদক,
দৈনিক ইত্তেফাক, ঢাকা,
জনাব,
আপনার বহুল প্রচারিত ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার চিঠিপত্র কলামে পত্রটি নিম্নলিখিত পত্রটি প্রকাশ করলে বাধিত হব।
বিনীত
মোঃ মাহামুদুল হাসান
সূত্রাপুর, ঢাকা-১১০০
‘যানজট নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ চাই’
ঢাকা একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রাচীন শহর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এ শহরটি বাংলাদেশের রাজধানীর মর্যাদা লাভ ক ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ কাজের সন্ধানে এসে আশ্রয় নিয়েছে রাজধানী শহরে। তাই আয়তনের তুলনায় অনেক বেশি লোকসংখ্যার ডা বহন ন করতে হচ্ছে ঢাকা শহরকে। মানুষের প্রয়োজনে বেড়েছে যানবাহনও। ফলে শুরু হয়েছে যানজট। বাংলাদেশের মানুষের কাছে যানজট আজ এক অসহনীয় যন্ত্রণা। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় বড় শহরগুলোতে যানজট বর্তমানে প্রকট রূপ ধারণ করেছে। বাসা থেকে বের হওয়া মাত্র কোথাও না কোথাও নিশ্চিত যানজটের কবলে আটকা পড়তে হয়।
মূলত সুষ্ঠু পরিকল্পনা, অপ্রশস্ত রাস্তা, ট্রাফিক নিয়ম পালনে অনীহা এবং অশিক্ষিত, অসচেতন রিকশা ও টেম্পু চালকদের দায়িত্বহীনতা যানজটের অন্যতম কারণ। তাছাড়া শহরের ফুটপাথগুলোর অধিকাংশই হকারদের দখলে চলে যাওয়া ও রাস্তার দু’পাশ দিয়ে ট্রাফিকগুলো সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। পুরনো ঢাকা ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্রস্থল হওয়ায় এবং রাস্তাঘাটগুলোর পরিকল্পিত সংস্কার না হওয়ার ফলে দিনদিন যানজট বেড়েই চলেছে ।
যানজট দূর করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা হলো :
১. অপ্রশস্ত রাস্তাগুলোকে অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে প্রশস্ত করতে হবে।
২. অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা বাড়িঘরগুলো ভেঙে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে তৈরির
৩. রিকশা ও ভ্যান বাতিল করে বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. রাস্তার দু’পাশে যত্রতত্র ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. ফুটপাথের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে হবে।
৬. ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী এবং দায়িত্ব পালনে সক্রিয় করতে হবে ।
৭. ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
৮. ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে।
উল্লিখিত ব্যবস্থাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহরের যানজট অনেকাংশে লাঘব করা যাবে বলে আমি মনে করি ।
মোঃ সাইদুর রহমান
সূত্রাপুর, ঢাকা
আরো পড়ুন: সোনার তরী কবিতার নামকরণের সার্থকতা
(সবচেয়ে আগে সব খবর, সঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)