ফুটবলে কোন দলের সাপোর্টার বেশি জানার আগ্রহ ফুটবল ভক্তদের। আসলে কোন দলের জনপ্রিয়তা বেশি সেটা এক বাক্যে প্রকাশ করা সম্ভাব না। তবে ফুটবল মূলত ল্যাটিন অ্যামেরিকা ও ইউরোপ কেন্দ্রিক হলেও ধিরে ধিরে এশিয়া মহাদেশে ফুটবলে জনপ্রিয়তা বাড়াছে। তারি ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ফুটবলে কোন দলের সাপোর্টার বেশি চলুন দেখে আসি।

বাংলাদেশে ফুটবলে কোন দলের সাপোর্টার বেশি
বাংলাদেশের মানুষের ফুটবল নিয়ে আগ্রহের নোন শেষ নাই। বিশ্বকাপ আসলেই দেখা যাই নানা রকম আবেগি সব কান্ড। বিভিন্ন পেপার পত্রিকা এবং আনলাইন জরিপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার ৪৫%, ব্রাজিলের সাপোর্টার ৩০% , জার্মানির সাপোর্টার ১০% পর্তুগালের সাপোর্টার ৫%, ইংল্যান্ডের সাপোর্টার ৫% ফ্রান্সের সাপোর্টার ২%, অন্যান্য দলের সাপোর্টার ৩%।
বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা সাপোর্টার কত
বাংলাদেশে ফুটবলে জনপ্রিয়তার অগ্রসর হয়েছে ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় বারের মত ম্যারাডোনার হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে। বহুদিন পেরিয়ে গেলেও মেসির হাত ধরে এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের শিরোপার স্বাদ অধরাই রয়ে গেছে। সার্জিও আগুয়েরো, লিয়নেল মেসি, লাউতারো মার্টিনেজ ও অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া এই চার ফুটবল তারোকার নৈপুণ্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আর্জেন্টিনার সাপোর্টাররা বার বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখে। ফুটবলের নান্দনিও নৈপুণ্যের প্রদর্শনে আর্জেন্টিনার তুলনা মেলে না। যার কারনে বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা বার বার বিশ্বকাপ নিতে ব্যর্থ হলেও আর্জেন্টিনার জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমে না।
প্রতি আসরে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার হিসাবে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে। ২০১৪ সালে ফাইনালে হেরে আর্জেন্টিনার আরো এক বার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। তবে তাতে সমার্থকদের কোন ভাটা পড়েনি। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ১৭৭৩.৮৮ পয়েন্ট নিয়ে ফিফা র্যাংকিং ৩ নাম্বারে অবস্থানে থাকা আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপে এবার বেশ ছন্দে আছে। ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকর লিয়নেল মেসির পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী এটিই তার শেষ বিশ্বকাপ। কোঁচ লিওনেল স্কালোনির অধীনে লিয়নেল মেসি, লাউতারো মার্টিনেজ ও অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, পাওলো দিবালা, রদ্রিগো ডি পল দারুন এক তারুণ্যের সমন্বয়ে আরো এক বার বিশ্বকাপ জয়ের দারুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদের।
তারকা জরিপে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার
বাংলাদেশের সেলিব্রেটি তারকা জরিপ করলে দেখা যায় আর্জেন্টিনার সাপোর্টার অন্যান্ন দলের তুলনায় অনেক বেশি। সেলিব্রেটি তারকা জরিপে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার- মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহম্মেদ এরা সবাই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার: শাকিব খান, জয়া আহাসান, সাবিলা নূর, সাফা কবির, মেহজাবিন চৌধুরী, তানজিন তিশা, নুসরাত ইমরোজ তিশা, জায়েদ খান, ইলিয়াস কাঞ্চন, হিরো আলম সহ আরো অনেক সাংস্কৃতিক তারকা আর্জেন্টিনার দলের সাপোর্ট করে থাকে।
ব্রাজিল ফুটবলে দলের সাপোর্টার
১৯৩০ সাল অর্থাৎ ফিফা বিশ্বকাপের শুরু থেকে সবথেকে সফল দল হিসাবে বিবেচিত ব্রাজিল। একমাত্র দল হিসেবে এখোনো পর্যন্ত ফিফা বিশ্বকাপের প্রতিটা আসরেই অংশগ্রহন করা দলটির নাম হচ্ছে ব্রাজিল। ব্রাজিল মোট পাচ বার ৫ বার (১৯৫৮,১৯৬২,১৯৭০,১৯৯৪,২০০২) বিশ্বকাপ জয়লাভ করে। এছাড়া তাদের ঝুলিতে আছে ৯বার কোপা আমেরিকা জয়ের রেকর্ড। দুই বার আছে অলিম্পিক জয়ের কৃতী। ফুটবলের রাজপুত্র পেলে থেকে শুরু করে রোনালদো, কাকা, হালের নেইমার জুনিয়ার ফুটবলের নিপুন দক্ষতার প্রেমে পড়ে দিনে দিনে বিশ্বব্যাপি ও বাংলাদেশে বহু সমার্থক বৃদ্ধি পেয়েছে।
আসন্ন কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এর নেইমার জুনিয়ার, গাব্রিয়েল জেসুস, ভিনিসিউস জুনিয়র, রাফিনহা, থিয়াগো সিলভা, কেসেমিরো এবং কোচ তিতে সিনিয়ার-জুনিয়ারের সমন্বযয়ে দারুন এক দল ঘোষণা করেছ ব্রাজিল। বিশ্বের ১০০ জন ফুটবল বিশ্লেষকের সূত্র অনুযায়ী আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের সবথেকে বেশি সম্ভাবনাময় দল হল ব্রাজিল। ব্রাজিলের ব্রাজিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৫০ শতাংশ মানুষ।
ফিফা র্যাংকিং ১৮৪৩.৭৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্টের শীর্ষে থাকা ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে এবারের আসর শুরু করতে চাই।
তারকা জরিপে ব্রাজিলে সাপোর্টার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রওশন এরশাদ, সিয়াম, আরফান নিশু, রিয়াজ, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহমান, মৌসুমি, ওমোর সানি, মোনোয়ার হোসেন ( ডিপজল ) অনন্তা জলিল, ফেরদৌস, বিদ্যা সিনহা মিম, জাকিয়া বারী মম, রোসান, পরশি, নাট্যকর ফারুক সহ আরো অনেকেই ব্রাজিল দলের সাপোর্ট করে।
জার্মানি ফুটবলে দলের সাপোর্টার
জার্মানি ফুটবল দল ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি ধারাবাহিক সফলতা পেয়ে আসছে। বিশ্বকাপে জার্মানির যাত্রা শুরু হয় ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে। সবচেয়ে বেশি বার সেমিফাইনাল খেলা দলটির নাম হচ্ছে জার্মান। জার্মানি দলের ফিফা র্যাংকিং ১৬৩৬.৩২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ তম স্থানে অবস্থান করছে। জার্মানি এখনও পর্যন্ত ৪টি ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০, ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ জয়ী দলের নাম। এছাড়া জার্মানি ইউরোপীয় চাম্পিয়ানশিপ জিতেছে ৪ বার ১৯৭২, ১৯৮০, ১৯৯৬ সালে। একবার অলেম্পিক জয়ী দলটির আরো আছে ৩টি ফিফা কনফিডারেশন কাপ। এতো সব অর্জন থাকার কারনে বাংলাদেশে জার্মানি দলের সাপোর্টর দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কাউন্টার অ্যাটাক ও গতিময় ফুটবল উপহার দেওয়ার জন্য আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সাথে পাল্লা দিয়ে জার্মানি ফুটবল দলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
ফ্রান্স ফুটবলে দলের সাপোর্টার
ফ্রান্স ফুটবল দলটি ১৯০৪ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ফ্রান্স দলটি আধুনিক সময়ের সবচেয়ে আলচিত ফুটবল দল। জিনেদিন জিদান থেকে শুরু করে আতোয়ান গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমবাপে, ও বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার একজন মুসলিম ব্যালন ডি অর বিজয়ী করিম বেনজেমা, উসমান ডেম্বেলের নান্দকিয় ফুটবলের জাদুতে মজেছে লাখো ফুটবল প্রেমীরা। ২০১৬ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২০২২ গোল্ডেন যুগ বলা হয় ফ্রান্স ফুটবল দলকে। এখনও পর্যন্ত ফ্রান্স ২বার বিশ্বকাপ কয়ের স্বাদ পেয়েছে। জিনেদিন জিদানের হাত ধরে প্রথম শিরোপা অধরা কাটায়। বর্তমান ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ান ফ্রান্স ২০১৮ সালে পল পগবা, এনগোলো কঁতে, কিলিয়ান এমবাপে হাত ধরে দাপুটে ফুটবলে।
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ফিফা র্যাংকিং ১৭৫৯.৭৮ পয়েন্ট নিয়ে ৪ নম্বার অবস্থানে থাকা দলটি আরো একবার ট্রফি উচিয়ে দেখার স্বপ্ন যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। যারা প্রিমিয়ার লীগ , লিগ ওয়ান, লা লিগা, চ্যাম্পিয়ান্স লিগ দেখেয় দিনে দিনে হু হু করে বেড়েই চলেছে ফ্রান্স দলের সাপোর্টার।
মুসলিম ফুটবল নির্ভর দলটির কোচ হিসেবে প্রায় অর্ধযুগ ধরে দায়িত্বে আছেন ডিডিয়ার ডেসচ্যাম্পস। ফ্রান্সের বিশ্ব সেরা হওয়ার মূল কারিগর হলের ডিডিয়ার ডেসচ্যাম্পস। বাংলাদেশে ফ্রান্স ফুটবল দলের সাপোর্টার অনেকটাই চোখে পড়ার মত।
পর্তুগাল ফুটবলে দলের সাপোর্টার-ফুটবলে কোন দলের সাপোর্টার বেশি
পর্তুগাল দলটি ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং সর্বপ্রথম ফিফা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে স্পেনের সাথে ১৯২১ সালের ৮ই ডিসেম্বার। পর্তুগালের সবথেকে বড় সফলতা ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়ান। তাছাড়া ফিফা কনফিডারেশন কাপের তৃতীয় অবস্থানে ২০১৭ সাল। উয়েফা নেশনস লিগে চ্যাম্পিয়ান ২০১৯ সালে। পর্তুগাএর সবথেকে বড় জয় ৮-০ ব্যাবধানে ১৯শে নভেম্বার ২০০৩ সালে কুয়েতের বিপক্ষে। পর্তুগালের সবথেকে বড় পরাজয় ২৫ শে মে ১৯৪৭ সালে পর্তুগালের ঘরের মাঠে ০-১০ গোলের ব্যবধানে ইংল্যান্ডের সাথে লজ্জার রেকর্ড করে।
পর্তুগালের পোষ্টার বয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখনও পর্যন্ত পর্তুগালের হয়ে ম্যাচ খেলেছে ১৯১টি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোল সংখ্যা ১১৭টি।
ফার্নান্দো সান্তোসের অধীনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, রেনাটো সানচেস, ব্রুনো ফার্নান্দেস, পেপে, রিকার্ডো হোর্টা, সিনিয়ার জুনিয়ার মিলিয়ে টিম কমিউনিকেশনে দারুন এক দল গড়েছে পর্তুগাল। বাংলাদেশে পর্তুগালের সাপোর্টার ধরা হয় ৫% তবে খুব তাড়াতাড়ি তা বড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বেলজিয়াম ফুটবলে দলের সাপোর্টার
১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে বেলজিয়াম একই বছরে দলটি উয়েফার সদেশ্য পদ লাভ করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সর্বপ্রথম পহেলা মে ১৯০৪ সালে বেলজিয়াম ফ্রান্সের মুখমুখি হয় সেই ম্যাচই বলে দেয় কতটা নৈপুণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখে বেলজিয়াম।
বাংলাদেশে ফুটবলে কোন দলের সাপোর্টার বেশি তার পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে বেলজিয়ামের কথা না বললেই না। কারন এক জরীপে দেখা গেছে বাংলাদেশে বেলজিয়ামের সাপোর্টার বেশ চোখে পড়ার মত।
(সবার আগে সব খবর প্রতি মুহূর্তে পেতে ফলো করুন আমাদের Google News পেজ)